শেষ বিকেলের মেয়ে - জহির রায়হান (বাংলা ইপাব)


ডাউনলোড: Epub Or Mobi Or PDF

সতর্কতাঃ এই বইটি শিশু-কিশোরদের জন্য নয়। ভবিষ্যৎ কিশোরা যখন যৌবনে পদার্পন করবে তখন তাদের এই বইগুলো সাহিত্য চর্চায় ভূমিকা রাখবে আশারেখে আপলোড করা হলো। বইটি পড়ার ক্ষেত্রে শিশু-কিশোররা সাবধানতা অবলম্বন করো।

রিভিউ: 
''শেষ বিকেলের মেয়ে'' জহির রায়হান রচিত একটি রোমান্টিক প্রেমের উপাখ্যান। উপন্যাসের কথক কাসেদ, পেশায় একজন কেরানি। কিন্তু লেখক তার লেখনীর মাধ্যমে কাসেদকে নায়কের মর্যাদা দেয়ার পাশাপাশি, তাকে বেশি মাত্রায় মার্জিত ও রুচিবোধ সম্পন্ন ব্যক্তি হিসাবে পাঠকদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন এবং চরিত্রটিকে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে একজন কেরানির ক্ষেত্রে। এছাড়া কেরানি কাসেদের জীবনে আসা তিনজন নারী জাহানরা, শিউলি এবং সালমা কাউকেই সে ভালোবাসার বান্ধনে বাঁধতে পারেনি। সালমা যখন কাসেদের সাথে দূরে নিরুদ্দেশ হয়ে যাবার প্রস্তাব দেয়, তখনও কাসেদ নির্বাক ছিল। এমনকি সে জাহানারাকেও ঘরের স্ত্রী বানাতে ব্যর্থ হয়, একই সাথে সে শিউলির কাছ থেকে বিতাড়িত হয়। এসকল দিক কাসেদ চরিত্রটিকে পাঠকের হৃদয়ে হতাশার ছাপ ফেলেছে। জাহানারা ও শিউলি দুইজনই স্বচ্ছল পরিবারের আধুনিক মেয়ে। কিন্তু কাসেদের প্রতি দুর্বলতা পাঠককে বিস্মিত করে, আবার জাহানারা তার হৃদয় গহীনে কাসদেরে জন্য ভালোবাসার বীজ বপণ করলেও, কখনও প্রকাশ করেনি। এক পর্যায়ে জাহানারা কাসেদকে ভুল বোঝে এবং নিজেকে আড়ালে নিয়ে যায়। জাহানারা কেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয় নিজের আত্নমর্যাদাবোধ বজায় রাখার জন্য নাকি কাসেদের কাছ থেকে অনাকাঙ্খিত আচরণের জন্য ? জাহানরা কি তবে অভিমানকেই বেশি গুরুত্ব দিল, প্রকৃত ভালোবাসার কাছে নত না হয়ে? লেখক ইচ্ছা করলে এই বিষয়টা পরিষ্কার ভাবে উপস্থাপন করতে পারতেন। আবার শিউলি চরিত্রটিও পাঠকের হৃদয়ে স্থান করে নিতে পারেনি, যদিও সে পুরোপুরি সংস্কারমুক্ত এবং আধুনিক মেয়ে। অন্যদিকে, নাহার সর্ম্পূণ ব্যতিক্রম একটি চরিত্র, যার মাধ্যমে লেখক তার লেখনীর সব রহস্য লুকিয়ে রেখে, সর্বশেষে রহস্যের উদঘাটন করেছেন। এবং নাহার চরিত্রটির মাধ্যমেই লেখক নারীদের মাঝে থাকা অদম্য সাহস ও বিরত্ব প্রকাশ করেছেন, নাহার প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে যে সকল ভুলবোঝাবুঝি, অহংবোধ এবং অভিমানের উর্দ্ধে ভালোবাসা। জাহানারা যা পারেনি, নাহার তার প্রকৃত ভালোবাসার টানে অসম্ভবকে সম্ভব করতে পেরেছে।এভাবে করে নাহার হয়ে যায় উপন্যাসের “শেষ বিকেলের মেয়ে”। লেখক ইচ্ছা করলে জাহানারাকে কাসেদের ঘরের স্ত্রী করে দিতে পারতো। কিন্তু, লেখক এই পন্থা অবলম্বন করেনি, যা উপন্যাসকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে এবং পাঠকের হৃদয়ে অন্যরকম ভালোলাগার অনুভূতি সৃষ্টি করেছে। কেরানি কাসেদ কি কখনও জানত যে তার ঘরে থাকা মেয়েটিই হবে, কাসেদের জীবনসঙ্গী ? হয়ত, না। “শেষ বিকেলের মেয়ে” উপন্যাসে জহির রায়হান সাধারণ এই ব্যাপারটিই তার সুনিপুন লেখার মেধ্যমে পাঠকের কাছে চমৎকার ভালে তুলে ধরেছেন।

উৎস: আমারবই.কম থেকে

কোন মন্তব্য নেই

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

হোম